মাহাবুবুর রহমান.
কক্সবাজারের ইতিহাসে প্রথম বারের মত আয়োজিত হচ্ছে চাকরী মেলা। আর এই মেলাতে শুধু মাত্র কক্সবাজার জেলার স্থানীয় বাসিন্দারাই চাকরীর সুযোগ পাবে। কোন তদবির বা দেনদরবার নয় বরং যোগ্যতা স্বাপেক্ষে তাৎক্ষনিক চাকরীর সুযোগ পাবে বলে জানান এই অনন্য আয়োজনের প্রধান কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃআশরাফুল আফসার। তিনি বলেন,৪ মে সকাল ৯ টা থেকে উখিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে অনুষ্টিত হবে এই চাকরী মেলা এ জন্য ২ মে থেকে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগ্রহীদের নিবন্ধন করার জন্য আহবান জানান তিনি। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক বলেন,২০১৭ সালের ২৫ আগষ্টের পরে থকে পার্শবর্তি দেশ মায়ানমার থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া পর থেকে বদলে যেতে থাকে কক্সবাজারের স্বাভাবিক পরিস্থিতি। শুধু মানুষ নয় জীব বৈচিত্র বেশির খেত্রে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। একই সাথে স্থানীয় মানুষ জনের হয়েছে অপুরনিয় ক্ষতি। সবাই জানে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে বিশে^র বড় ছোট সব এনজিওর গন্তব্য হয়েছে আমাদের এই পর্যটন নগরী কক্সবাজার। এখানে শতাধিক দেশি বিদেশী এনজিও কার্যক্রম চলছে তারিধারাবাহিকতায় প্রায় ২ হাজারের বেশি বিদেশী নাগরিক কাজ করছে। একই সাথে অসংখ্য বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকজন কাজ করছে। এরি মধ্যে জোরদাবী উঠে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষ জনকে চাকরী বঞ্চিত করা হচ্ছে। পরবর্তিতে কক্সবাজারের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন কক্সবাজারের স্থানীয় ছেলে মেয়েদের চাকরীর বিষয়টি নিশি^ত করার জন্য সব এনজিও কর্মকর্তাদের সাথে একাধিক বৈঠক করে এবং বেশি খেত্রে সফল হয়েছে ইতি মধ্যে বেশির ভাগ এনজিওতে স্থানীয়রা চাকরী পাচ্ছে, তবুও আমরা আরো বেশি পরিমান স্থানীয় ছেলে মেয়েদের যোগ্যতা অনুসারে কাজ দেওয়ার জন্য এই চাকরী মেলার আয়োজন করেছি। এদিকে স্থানীয়দের চাকরী নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসা স্থানীয়দের চাকরী আন্দোলনের সমন্নয়ক ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের আন্দোলনের ফসল। প্রশাসন যে এ রকম একটি মহতি কাজ করতে যাচ্ছে সে জন্য আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে বলতে চাই চাকরী মেলা যাতে সত্যিকার অর্থে চাকরী প্রার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারে এটা যাতে লোকদেখানো না হয়। তবে এর মধ্যে দিয়ে একটি নতুন যুগের সূচনা হলো বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে উখিয়া সুজন সভাপতি বলেন,প্রশাসনের উদ্দোগে চাকরী মেলা এটা খুবই আনন্দের বিষয়। তবে আমরা প্রায় সময় দেখি স্থানীয়দের শুধু মাত্র পিয়ন বা ছোট কাজের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়। মূল সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমন পদে যোগ্যতা থাকা সত্বেও স্থানীয়দের চাকরী দেওয়া হয় না। কারন প্রত্যেক এনজিও শীর্ষ পদে আছে বাইরের জেলার লোকজন। তাই আমরা আশা করবো প্রকল্প পরিচালক বা প্রধান নিবার্হী পদে যোগ্যতার ভিত্তিতে স্থানীয় ছেলে মেয়েরা যাতে নিয়োগ পায়।
এদিকে চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন,একটা বিষয় আমরা লক্ষ করছি স্থানীয় বলতে বেশির ভাগ সময় শুধু মাত্র উখিয়া টেকনাফকে বুঝানো হয়। অথচ রোহিঙ্গাদের কারনে আমরা সবাই সমান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। আমি আসা করবো স্থানীয় বলতে জেলার সব উপজেলার ছেলে মেয়েদের যেন সমান ভাবে সুযোগ নাই।
জেলার অন্যতম এনজিও মুক্তির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রতন দাশ বলেন,বেশির ভাগ খেত্রে অভিজ্ঞতার কথা বলে স্থানীয়দের চাকরী বঞ্চিত করা হয়। যেহেতু রোহিঙ্গারা আগে আসেনি আর এভাবে চাকরীর সুযোগও আগে আসেনি তাই কাজ বা চাকরী ও করা হয়নি। তাহলে অভিজ্ঞতা কিভাবে হবে। আমি বলবো প্রয়োজনে লেখাপড়ার যোগ্যতা কিছুটা শিথিল করে হলেও স্থানীয় ছেলে মেয়েদের চাকরী নিশ্চিত করতে হবে।
এ ব্যপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন,স্থানীয় বলতে কক্সবাজারের ৮ উপজেলায় নাগরিকদের বুঝাবে। ৪ মে চাকরী মেলার জন্য আমরা সর্বাত্বক প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। ২ মে থেকে উখিয়া উপজেলাতেই আমরা চাকরী প্রত্যাশিদের আবেদন গ্রহন করবো। আমি আহবান করবো সবাই যেন নিবন্ধন করে। আর এই নিবন্ধন প্রকৃয়া ডাটা বেইজ ভিত্তিতে হবে জানিয়ে তিনি বলেণ,এবারের চাকরী মেলাতে প্রায় ৭০ টির বেশি দেশি বিদেশী এনজিও তাদের চাকরী বাজার খোলে বসবে। সেখানে যোগ্যতা ভিত্তিতে অবশ্যই শতভাগ কক্সবাজারের স্থানীয় ছেলে মেয়েরাই চাকরী পাবে। ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আফসার বলেন,চাকরী মেলাতে হয়তো সবাইকে চাকরী দেওয়া সম্ভব হবে না তবে যারা আবেদন করবে তাদের নাম আমাদের তথ্য ভান্ডারে থাকবে পরবর্তিতে যখন এনজিওকে নিয়োগ দেবে তখনও ঐ আবেদন কারীরা সুযোগ পাবে।
মন্তব্য করুন