মাহাবুবুর রহমান.
স্কুল ভবনের অভাবে মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম,একাধিক আবেদন অনুরোধ করার পরও নির্মাণ কাজ শেষ করা যাচ্ছে না নতুন স্কুল ভবনের তাই এখন বাধ্য হয়ে গাধাগাধি করে বসে অনেকটা অমানবিক অবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে পাঠদান। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত পৌর প্রিপ্যার্যটারী উচ্চ বিদ্যালয়ের দৃশ্য এটি। কক্সবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৪ বছর আগে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে শুরু হওয়া স্কুল ভবন নির্মাণ কাজের অর্ধেকও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার এখন কাজ বন্ধ প্রায় তিন বছর ধরে, ফলে অনেকটা নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীরা। তাই দ্রæত স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবী জানান শিক্ষার্থীরা।
শহরের পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিমুল এহসান মানিক বলেন,আমার দেখামতে কক্সবাজারের শহরের মধ্য অনেক প্রসস্থ মাঠ এবং স্কুলের অবকাঠামো সুবিধা,প্রযুক্তি নির্ভরতা এবং আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্টানের মধ্যে শ্রেষ্ট পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়। আমি এই স্কুলে যোগদানের পর থেকে দেখছি এখানে বড় সমস্যা হচ্ছে স্কুলের পুরাতন জায়গায় একটি নতুন ভবন হওয়ার কথা থাকলেও জানতে পেরেছি সেটা ৩ বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। যার ফলে স্কুলের প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী অমানবিক ভাবে শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সেই ভবনটি কক্সবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল যার নির্মাণ ব্যায় ছিল প্রায় ৩ কোটি টাকা। কিন্তু মূল কাজের ৪০% কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে অনেক চিঠি দিয়েছি মৌখিক ভাবে অনেক বার অনুরোধ করেছি কিন্তু কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। যার ফলে স্কুলের কার্যক্রম চালাতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে।
পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন,নতুন ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়াতে আমরা খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি,শিক্ষার্থীদের ক্লাব করানো যাচ্ছে না। একই ক্লাসে ৬০/৭০ জনকে বসিয়ে ক্লাস করাতে হচ্ছে। বিজ্ঞান শাখার কার্যক্রম চালাতে পারছিনা,ছাত্রীদের কমন রুম দিতে পারছি না। লাইব্রেরী করতে পারছি না। তাছাড়া শিক্ষকদের জন্য অফিস রুম,কমন রুম কিছুই করতে পারছি না। মোট কথা স্কুলের কার্যক্রম অনেকটা অসুবিধায় পড়েছে।
পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী আনজুমন আরা বলেন,আমরা এক ক্লাসে প্রায় ৩০ জন ছাত্রী আছি অনেকে বসার জায়গা পায় না। যদি বিভাগ খোলা যেত তাহলে সবার জন্য পড়তে সুবিধা হতো। বিশেষ করে গরমের দিনে সবাই এক সাথে বসতে খুবই অসুবিধা হয়। সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মেয়েদের অনেক সমস্যা থাকে সে জন্য একটি মহিলা কমন রুম খুবই দরকার যা আমাদের স্কুলে নাই। মূলত বিদ্যালয়ের নতুন ভবনটি না হওয়াতে কোন কিছুই করা যাচ্ছে না। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবী করবো যেন দ্রæত আমাদের নতুন ভবনটির কাজ শেষ করা হয়।
এদিকে কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী বাপ্পা রাজ জানান,পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের কাজটির সাব ঠিকাদার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলার জাবেদ মো: কায়সার নোবেল,তিনি প্রথমে কিছুদিন কাজ করলেও পরে উনার ব্যাক্তিগত ঝামেলার কারনে কাজ করেনি। সেই থেকে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ আছে। আমরা উনাকে বেশ কয়েকবার তাগাদা দিয়েছি কিন্তু তিনি সাড়া দিচ্ছে না। এতে আসলেই উক্ত স্কুলের বেশ সমস্যা হচ্ছে।
এ ব্যপারে পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের সাব ঠিকাদার জাবে মো: কায়সারের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন শুনার পর এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছিনা বলে আর কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ ব্যপারে কক্সবাজার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মৃদন্ময় চাকমা বলেন, উক্ত কাজটি শেষ করার জন্য ইতি মধ্যে ঠিকাদারকে বেশ কয়েকবার চিঠিও দেওয়া হয়েছে। তবে একটু বলতে পারি চলতি মাসের মধ্যে কাজ না ধরলে উক্ত ঠিকাদারের কাজ বাতিল করে,নতুন ভাবে কাজ শুরু করার চেস্টা করবো।
মন্তব্য করুন