শিরোনাম :
‘‘বিশ্ব শান্তির জন্য হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর শিক্ষা ও আদর্শ সর্বাবস্থায় অনুকরণীয়’’ কক্সবাজারে মানবপাচার চক্রের ৪ সদস্য আটক : উদ্ধার ৭ বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা ফুটবল : চ্যাম্পিয়ন মহেশখালী রানারআপ চকরিয়া বর্ণাঢ্য আয়োজনে ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন সাংবাদিক মাহীকে ভুল চিকিৎসা: তত্ত্ববধায়ক মোমিনকে বদলি, তিন সদস্য কমিটি গঠন জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত¡বধায়ক ডা: মুমিনের বদলী নতুন আসছেন ডা:মং টিংঞো ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ : ঘোনারপাড়ার নির্মল ধরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা কক্সবাজারে নকল কোর্ট ফি বিক্রি চক্রের ২ জন আটক রোহিঙ্গাদের প্রতিরোধে স্থানীয়দের সর্বাত্মক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে সিরাজ আহমদ নাজিরের ২০ তম মৃত্যু বার্ষিকী

রামুর কাশেম বীজ ভান্ডার থেকে ৩৯ বস্তা নকল বীজ ধান উদ্ধার

রির্পোটার:
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, জুন ১৯, ২০১৯
  • 683 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

মাহাবুবুর রহমান.
কক্সবাজারে সরকারি বিএডিসির ধানের বস্তাতে স্থানীয় নি¤œ মানের ধান ঢুকিয়ে দিয়ে বিক্রি করছে বীজ ডিলাররা। এতে ডিলাররা বিপুল টাকার লাভবান হলেও চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ চাষীরা। দীর্ঘদিন ধরে জেলার বেশির ভাগ বিএডিসির ধানের ডিলার এই অনিয়ম দূর্নীতির আশ্রয় নিলেও তাদের দেখার কেউ নেই। ১৭ জুন রামু কাশেম বীজ ভান্ডারে সরকারি বিএডিসি ধানের বস্তাতে নি¤œমানে স্থানীয় বীজ ধান বিক্রি কালে ৩৯ বস্তা নকল সরকারি বীজ ধান উদ্ধার করেছে কতৃপক্ষ। এ ঘটনার পরে জেলার অনেক চাষী অভিযোগ করেন বীজ ডিলারদের কাছ থেকে উচ্চ মূল্যে বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপন করে অনেকবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এছাড়া তারা সারেও ভেজাল সার মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করে এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আমরা সাধারণ চাষীরা।
রামু কাওয়ারখোপ এলাকার চাষী রমিজ আহামদ বলেণ,আমি প্রতি মৌসুমে ১০ কানির উপরে জমিতে ধান চাষ করি। এবারে রামু চৌমুহনির একটি বীজের দোকান থেকে সরকারি ধান কিনে জমিতে দেওয়ার পর দেখি যে পরিমান বীজ থেকে চারা হওয়ার কথা সে পরিমান চারা হয়নি। এছাড়া পরে রোপন করতে গিয়ে দেখি চারার মান খুবই খারাপ। আমি তখন বুঝতে পারি বীজে সমস্যা ছিল। পরে আমি বিভিন্ন ভাবে জানতে পারি বস্তাতে সরকারি লেভেল থাকলেও বীজ ধানে ছিল স্থানীয় খুবই নি¤œ মানের বীজ।
এদিকে রামু বেশ কয়েকজন চাষী অভিযোগ করেন রামু যে কয়েক টি বীজ এবং সারের ডিলার আছে সেটার মালিক আবুল কাশেম। তিনি সরকারি বীজ ধান কিনে সেখানে স্থানীয় ধান মিশিয়ে দেয়। আবার কিছু আছে সরাসরি সরকারি বস্তাতে স্থানীয় ধান ঢুকিয়ে দিয়ে বিক্রি করে। আর সরকারি ধানের মূল্যা ১০ কেজি বস্তার সর্বোচ্চ ৩৮৫ টাকা কিন্তু তিনি মাঝে মধ্যে ৫০০ টাকাও নেয়। এছাড়া তিনি সারেও প্রচুর ভেজাল মিশিয়ে আলাদা প্যাকেট করে বিক্রি করে। এদিকে ১৭ জুন রাত ৮ টায় রামু ফকিরা বাজারের সেই কাশেম বীজ ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে ৩৯ বস্তা(৩৯০ কেজী) নকল সরকারি ধান জব্ধ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা,সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহ জালাল উদ্দিন(বিএডিসি), রামু উপজেলা কৃষি অফিসার মাসুম ছিদ্দিকি,সহকারি পরিচালক (বীজ) কামরুন্নাহার। এ ব্যপারে জেলা বিএডিসি কর্মকর্তা শাহ মোঃ শাহ জালাল উদ্দিন বলেণ,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রামু কাশেম বীজ ভান্ডারে অভিযান চালিয়ে সরকারি বিএডিসির বস্তাতে স্থানীয় জাতের হরি ও পাইজাম বীজ ধান বিক্রি কালে ৩৯ বস্তা বীজ উদ্ধার করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেণ,আমরা প্রায় খবর পায় অনেক প্রান্তিক পর্যায়ের বীজ ডিলার এ ধরনের প্রতরনার আশ্রয় নিচ্ছে তারা ফলে বিএডিসির সুনামক্ষুন্য হচ্ছে আর কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যদিও আমাদের জনবল সীমিত তাই এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিস সহ সংশ্লিষ্ঠদের প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। এ ব্যপারে কাশেম বীজ ভান্ডারের মালিক আবুল কাশেম বলেন, কিছু সরকারি বস্তা খালী পড়ে থাকায় আমি সেখানে স্থানীয় জাতের ধান বিক্রি করছিলাম এটা সত্য।
এদিকে গতকাল মহেশখালী পৌর এলাকার চাষী নজরুল ইসলাম বলেণ,মহেশখালীতে যে কয়েক টি বীজ বা সারের দোকান আছে সেগুলোতে প্রতিনিয়ত এ সমস্ত অনিয়ম চলে,আর আমরা দোকানে গিয়ে সরকারি বীজ ধান কিনতে চাইলে দোকান মালিকরা আমাদের নিরুৎসাহীত করে বেশি দামে স্থানীয় ধান কিনতে বলে তাদের লাভের জন্য। অনেক চাষী বেশি দাম দিয়ে স্থানীয় জাতের ধান কিনলেও আমি কিনিনা। আমি সরকারি ধানই ব্যবহার করি। এছাড়া সারের ডিলাররা আরো বেপরোয়া তারা প্রতিটি প্যাকেটে নকল সার মিশিয়ে দিয়ে অনেক সময় কৃষকরা খেতে সেই ধান বা সার ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্থ হলে দোকানেএসে অভিযোগ করলে উল্টো খারাপ ব্যবহার করে। তাই সব ধান এবং সারের ডিলারের বিষয়ে সঠিক ভাবে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার।
এদিকে চকরিয়া হারবাং ইউনিয়নের প্রান্তীক কৃষক আকবর আলী বলেন, গত বছর হারবাং ধান ডিলারের দোকানে নকল ধান বিক্রির অভিযোগ অভিযান চালিয়েছে সেখানে সরকারি বিএডিসির বস্তাতে নকল স্থানীয় ধান বিক্রির অভিযোগে ১ মাসের জেল দিয়েছিল। কিন্তু এর পরও কোন পরিবর্তন হয়নি। আর আমরা সাধারণ কৃষকরা কোথায় যাব, যদি চকরিয়া থেকে বীজ বা ধান সংগ্রহ করতে যায় তাহলে অনেক টাকা যাতায়ত বা পরিবহণ ভাড়া চলে যাবে তাই বাধ্য হয়ে কাছের ডিলারের দোকান থেকে কিনে আনি। কিন্তু সেখানে সরকারি ধানের বস্তাতে অনেক পাঁচ মিশালি ধান থাকে যেটা জমিতে দিলে ধানের গাছ হয় একেকটি একেক রকম। আর সার দিলেও কাজ হয়না কারন সারও নকল। এ সব বিষয়ে ভাল করে তদারকি করা দরকার।

নিউজটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই বিষয়ে আরো সংবাদ দেখুন
© All rights reserved © 2021 cox71.com
Developed by WebArt IT