মো. সাইফুল ইসলাম খোকন, চকরিয়া
অল্প পুঁিজতে কয়েকটি গরু নিয়ে খামার করে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছেন তরুণ এ উদ্যোক্ত্যা বাদল। দৃঢ় মনোবল, কঠোর পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে মানুষের ভাগ্যের পরির্বতন ঘটায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তিনি। রিক্সা ছেড়ে নিরলস প্রচেষ্ঠা আর দৃঢ মনোবলে আজ তাকে সফলতার দ্বারে পৌঁছে দিয়েছে। চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নে দরবেশ কাটা উত্তর পাড়া এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে আবু ওবাইদ বাদল।
বাদল জানায়, সংসারের অসচ্ছলতার কারণে রিক্সা চালিয়ে পরিবারের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো সে। আজ থেকে ৬ বছর পূর্বে ২০১২ সালে এলাকার জনপ্রতিনিধি সোলতান আহমদ ও জাকের হোসেন সার্বিক সহযোগীতা ও তার বন্ধুদের কাছ থেকে ৪৪ হাজার টাকা ধার নিয়ে গরু ক্রয় করে পরিসরে গড়ে তুলে গরুর খামার।
মানুষের কাছ থেকে ধারে নেয়া টাকায় প্রথম খামারীতে গরুর বাছুর কিনে তাদিয়ে শুরু করে জীবনের নতুন যুদ্ধের পদযাত্রা। বছর খানেক পর ওই গরু ২ লাখ টাকা বিক্রি করে সফলতা পান বাদল। এরপর বাদলকে আর পেছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরিবারে স্বচ্ছলতা পূরণের জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে খামার করে সরকারী কোন ধরণের পৃষ্টপোষক ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের সহযোগীতা ছাড়া আজ তা বাণিজ্যিক খামারে পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে ছোট-বড় মিলে ২৭টি গরু রয়েছে তার ডেইরী ফার্মে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১কোটি টাকা। তার ডেইরী ফার্মটি দুগ্ধ খামার নামে এলাকায় বেশ পরিচিতি রয়েছে। তবে এবার কোরবানির পশুর হাট জমে উঠার আগেই পুরো এলাকা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বাদলের ” রাজ কুমার “। নামটি শুনার পর পরই এলাকার সাধারণ লোকজন কেমন যেন অবাক করে থাকে। উপজেলায় কোরবানির পশুর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয়ে দাড়িয়েছে বাদলের ডেইরি ফার্মে বেড়ে উঠা (ষাঁড়ের নাম) রাজ কুমার। এবারের কোরবানি ঈদে ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করা হবে একটন (২৭ মণ) অধিক ওজনের এ রাজ কুমার ষাঁড়টি। এবার কোরবানির ঈদে রাজ কুমার কক্সবাজার জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি করেন খামারী বাদল। এবার কোরবানির ঈদের জন্য তাকে প্রস্তুত করা হয়েছে।
খামারী বাদলের গরুর রক্ষানাবেক্ষন দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মচারী জানায়, রাজ কুমার শুধু নামে নয়, তার খাবার-দাবারও সাধারণ পশুর চেয়ে আলাদা। খড়, ভূষি ছাড়াও তাকে খাওয়ানো হয় আপেল, কমলা, মাল্টা, চিড়া, গুড়সহ নানা রকমের খাবার। খাওয়া বাবদ প্রতিদিন রাজ কুমারের পেছনে খরচ হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। রাজ কুমার গরম সহ্য করতে পারে না। যেখানে তাকে রাখা হয় সেখানে তিনটি ফ্যান চলে। কোরবানির সময় ভালো দাম পেলেই তাকে লালন-পালনের পরিশ্রম স্বার্থক হবে।
খামারী আবু ওবাইদ বাদল বলেন, রিক্সা চালানো ছেড়ে দিয়ে গরুর খামার করার পেছনে সকল প্রকার সহযোগিতা দিয়েছে তার স্ত্রী। গরুর খামার করে অভাব অনটন দূর করে বর্তমানে জমির মালিক হয়েছেন তিনি। স্ত্রী ছেলে-মেয়ে নিয়ে বেশ সুখেই আছেন। এ গরুর লালন-পালন করতে খড়ের জন্য প্রায় ৩০ থেকে ৩২ কানি জমির চাষাবাদও করা হয়। নিজেকে এখন বড় ভাগ্যবান বলে মনে করেন বাদল। তবে এবারের কোরবানে খামারের শখের ষাঁড় রাজ কুমারকে উপযুক্ত মূল্যে দিয়ে বিক্রি করতে পারলে সবার পরিশ্রম স্বার্থক হবে বলে তিনি জানান। ##
মন্তব্য করুন