মাহাবুবুর রহমান.
কক্সবাজারে তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের জনজীবন। এতে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে অন্যদিকে তীব্র লোডসেডিংয়ের ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থী সহ সকলের মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যূৎ সরবরাহ না পাওয়ার ফলে লোডসেডিং বাড়ছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থী শহরের রুমালিয়ারছড়া এলাকার উম্মে সামলা আনজুমন বলেন,প্রচন্ড গরমে অবস্থা কাহিল তার উপর ঘন ঘর লোডশেডিংয়ে আমাদের অবস্থা আরো সূচনীয় হয়ে পড়েছে। রাতে ঘন্টা পর পর লোডসেডিং হয়। আর বিদ্যূৎ গেলে এক ঘন্টার মধ্যে আসে না। ফলে লেখাপড়া করতে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে। বিদ্যূতের সমস্যা আগে এরকম ছিল না এখন বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। তার দাবী সরকার প্রায় সময় বলে আমরা রাষ্ট্রীয় ভাবে বিদ্যূতে সয়ংসম্পূর্ন হয়ে গেছি কিন্তু বান্তবে কি অবস্থা সেটা এখন দেখতে পাচ্ছি। শহরের পাহাড়তলী এলাকার দিনমজুর আবুল কালাম বলেন,প্রচন্ড গরমের কারনে এখন কাজ করতে পারিনা। ৪ দিন আগে একবার বাদশাঘোনা এলাকায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে গিয়েছিলাম সেখানে প্রচন্ড গরমের ফলে মাথাঘূরে পড়ে গিয়েছিলাম। পরে স্থানীয় ডাক্তারের মাধ্যমে স্যালাইন দিয়ে কোন মতে আছি। যে অবস্থা হয়েছে আর কয়েক দিন কাজে যেতে না পারলে ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। এর মধ্যে ৪/৫ হাজার টাকা ধার করেছি। তিনি বলেন,গরমের মধ্যে ঘরে থাকতে পারছিনা তারউপর রাতে ঘুমাতেও পারি না। কারন এক ঘন্টা পর পর বিদ্যূৎ চলে যায়। রাতে ফলে গরমের কারনে ঘুমাতেও পারিনা। বিশেষ করে মাঝ রাতে অর্থাৎ ২ টা বা ৩ টার দিকে বিদ্যূৎ চলে যায় তখন উঠে বসে থাকা ছাড়া উপায় নাই। মোট কথা জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
রামু উপজেলার ব্যবসায়ি আলী আকবর বলেন,আমার মতে সব চেয়ে বেশি বিদ্যূৎ লোডসেডিং হচ্ছে রামুতে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৮ ঘন্টা বিদ্যূৎ থাকে না। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ যে ঠিকমত ঘুমাতে না পেরে শরীরের ডায়বেটিস,প্রেসার বেড়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে বিশ্রাম করতে কিন্তু বিশ্রামটা করবো কিভাবে ঘরে বাইরে কোথায় থাকতে পারিনা। এর মধ্যে আমরা মাঝে মধ্যে বিদ্যূৎ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলে জাতীয় গ্রিডের সমস্যা আমাদের করার কিছুই নেই।
এদিকে সচেতন মহলের দাবী যদি কখন লোডসেডিং হবে সেটা আগে বলে দেওয়া যেত আর সহনীয় পর্যায়ে লোডসেডিং করে তাহলে ভাল হয়। মোট কথা আর পারছিনা অসহ্য হয়ে গেছে।
মহেশখালী কালারমারছড়া এলাকার শিক্ষাবিদ মাস্টার জাকের বলেন,এমন গরম আমার ৫০ বছর জীবনে আগে কখনো দেখিনি। তার উপর তীব্র লোডসেডিংয়ে ভয়াবহ দিন পার করছি। তিনি বলেন,আগে গরমের সময় আমরা অনেক পুকুরে গোসল করতাম আর গাছের তলায় ছাড়া পেতাম কিন্তু এখন সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারনে সব ধু ধু মাঠে পরিণত হয়েছে। কোথায় গাছের ছাড়া নেই,গাছ নেই পাহাড় নেই ফলে গরমের তীব্রতা আরো বেড়েছে। আর ভবিষ্যতে কি হবে সেটা এক আল্লাহ ভাল জানে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার বিদ্যূৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল কাদের গণি বলেন,কক্সবাজারে দৈনিক বিদ্যূতের চাহিদা হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ মেঘাওয়াট কিন্তু আমরা এখন পাচ্ছি ২০ থেকে ২৪ মেঘাওয়াট সুতরাং অর্ধেকের বেশি সময় বিদ্যূৎ ঘাটতি তাই লোডসেডিং বাড়ছে। তবে আসা করে কিছু দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতী হবে।
মন্তব্য করুন