মাহাবুবুর রহমান.
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন হয়েছিল ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারী দীর্ঘ ৬ বছর পর ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্টিত হচ্ছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। কিন্তু অতীতের জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন নিয়ে নেতাকর্মী সহ কাউন্সিলারদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে না আগের মত। অনেকটা আনুষ্টানিকতা নির্ভর সম্মেলন হবে এমনটাই মনে করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। তবে ৭ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশাল জনসভার পরে তেমন কোন বড় সমাবেশ না করা সহ জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে শুধু মাত্র কাউন্সিলার সহ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সম্মেলন শেষ করার জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আছে এমনটাই জানালেন জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। তবে মাঠে প্রচার প্রচারনা না থাকলে ঢাকা কেন্দ্রীক জোর লবিং চলছে বলে জানান অনেকে। তাই কাউন্সিলার নয় ঢাকা কেন্দ্রীক লবিংয়ে ব্যাস্ত সবাই। তবে একটি সুন্দর সম্মেলনের মধ্যদিয়ে সৎ এবং পরিচ্ছন্ন নেতারাই জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা সাধারণ নেতাকর্মীদের।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড,ফরিদুল ইসলাম বলেন,বহুল প্রত্যাশিত জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের জন্য আমরা প্রস্তুত। ইতি মধ্যে ৪০৬ জনের কাউন্সিলার তালিকা চুড়ান্ত হয়েছে। তিনি জানান,প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিসাবে ২৮০,জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য আছে ৭১ জন,এছাড়া প্রতি উপজেলা থেকে ৫ জন সে হিসাবে ৫৫ জন মোট ৪০৬ জন কাউন্সিলার। এছাড়া ডেলিগেট থাকবে প্রায় দেড় হাজার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা জানেন ৭ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশাল সফল এক জনসভার পরে আবার নতুন করে বেশি মানুষজন নিয়ে সম্মেলন না করে দলীয় নেতাকর্মী দিয়েই সম্মেলন করার শেষ করার জন্য কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা আছে।
এই অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশা ছিল ঘটা করেই হবে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন এতে আসবে নতুন নেতৃত্ব। তবে কয়েক বার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও বার বার পিছিয়ে সর্বশেষ কাল ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্টিত হচ্ছে প্রহুল কাংখিত জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন। তবে এখনো কাউন্সিলার তালিকা বা আমন্ত্রন পত্র,ডেলিগেট,অনেক কিছুই অপুর্ণ বলে জানান জেলা আওয়ামীলীগ নেতারা।
এ ব্যপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদ প্রত্যাশি ছালাউদ্দিন আহামদ বলেন, অতীতে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন নিয়ে একমাস আগে থেকে সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা থাকতো। মিছিল মিটিংয়ে মুখরিত থাকতো পুরু জেলা। কিন্তু এবারে সব কিছুতে ভাটা। মূলত ৭ ডিসেম্বরের প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পরেই দ্রæত সম্মেলনের তারিখ পড়াতে হয়তো এমনটা হচ্ছে। আর কাউন্সিলার তালিকা হয়েছে কিনা বা কারা কাউন্সিলার হচ্ছে সে সব বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। বর্তমান জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও এবারের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী রেজাউল করিম বলেন,৭ ডিসেম্বরের প্রধানমন্ত্রীর বিশাল জনসভার পরে নতুন করে বড় আয়োজন না করে শুধু মাত্র কাউন্সিলার এবং দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে সম্মেলন করার নির্দেশনা রয়েছে কেন্দ্র থেকে তবুও আমরা প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী সমাগমের জন্য প্রস্তুতি রেখেছি। ৪০৬ জন কাউন্সিলার তালিকা হয়েছে প্রায় দেড় হাজারের বেশি ডেলিগেট সম্মেলনে অংশ নেবে।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী এড,রনজিত দাশ বলেন একটি সুন্দর সফল সম্মেলনের জন্য আমরা প্রস্তুত। তবে মাঠে তেমন বেশি প্রচার প্রচরনা না থাকলে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দিপনা ঠিকই আছে। আর আমি নিজে সাধারণ সম্পাদক প্রাথী হিসাবে সকল কাউন্সিলারদের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা সবাই বলছে ভোটের মাধ্যমে অথবা কাউন্সিলাদের মতামতের ভিত্তিকে নতুন কমিটি গঠন হলে সবাই খুশি হবে।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক এড,তাপস রক্ষিত বলেন, আমার মতে বাংলাদেশের অনেক জেলার চেয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ অনেক সুশৃংখ এবং সুসংগঠিত। এখানে কোন গ্রæপিং নাই। সামনেই আমরা এমন নেতৃত্ব চাই যারা সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করবে। ব্যাক্তি স্বার্থ বাদ দিয়ে দলের স্বার্থকে প্রাধ্যান্য দিবে। আমরা স্কুল জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন মূল দলে কাজ করছি আসা করি সেটা সামনে বিবেচনা করবে।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান কমিটির অনেক নেতারা বলেন,সম্মেলন কক্সবাজারে হলেও সবাই এখন ঢাকা মুখি লবিংয়ে ব্যাস্ত,দলীয় পদ পেতে সবাই এখন কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছে। তাই কক্সবাজারে সম্মেলনের কোন আমেজ নাই।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পরে কাউন্সিল অধিবেশন ছাড়াই সিরাজুল মোস্তফাকে সভাপতি ও মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। একই বছরের ১৩ অক্টোবর ৭১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর বর্তমান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়।
মন্তব্য করুন