মাহাবুবুর রহমান.
চরম ঝুকিতে পড়েছে কক্সবাজার খুরুশকুল ব্রীজ। ১৬ বছর আগে নির্মাণাধীন এই ব্রীজের ইতি মধ্যে বেশির ভাগ নাটবল্টু খুলে যাচ্ছে,উঠে যাচ্ছে পাটাতন। মূলত সংস্কারের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়েছে জেলা শহরের সব চেয়ে ব্যাস্ত এই ব্রীজটি। ১ বছর আগে ঝুকি কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে ভারী গাড়ী চলাচল বন্ধ করলেও বর্তমানে নড়বড়ে হয়ে গেছে ব্রীজটি। তাই দ্রুত ব্রীজের পাটাতন বদলে দিয়ে নাটবল্টু ভাবে ভাবে চেক করে আবারো সংস্কার করার দাবী জানান এলাকাবাসী।
কক্সবাজার শহরের সব চেয়ে পার্শবর্তী অঞ্চল হিসাবে খুরুশকুলের মানুষের সাথে এতদাঞ্চলের মানুষের সামাজিক,অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক সম্পর্ক বেশি। মূলত বাকঁখালী নদী এই দুই অঞ্চলের মানুষকে এক মোহনায় আসতে না দিলে ২০০৩ সালে এলাকার মানুষের বহু প্রতিক্ষিত খুরুশকুল ব্রীজটি চালু হয়। কক্সবাজার সড়ক জনপদ বিভাগের আওতায় প্রায় ১৬০ কোটি টাকা ব্যায়ে এই ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
খুরুশকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন,২০০৩ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করার পর থেকে এই ব্রীজে কোন ধরনের সংস্কার কাজ করা হয়নি। ফলে বর্তমানে ব্রীজটি চরম ঝুকির মধ্যে আছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ স্থানের পাটাতন উঠে যাচ্ছে,খুলে গেছে অসংখ্য নাটবল্টু। এবং অনেক জায়গায় ব্রীজের স্টিল খুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং মাটির নীচের অংশেও ঝুকিপূর্ন বলে মনে হচ্ছে। তিনি জানান,ব্রীজ দিয়ে একটি গাড়ী চলাচল করতে পারে। একমাথা থেকে একটি গাড়ী উঠলে অন্যপাশে গাড়ী দাড়িয়ে থাকতে হয়। আমরা বহু বছর ধরে দাবী করে আসছি ব্রীজটি নতুন করে সংস্কার এবং দুই লাইন বিশিষ্ট করার জন্য তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি তাই দ্রুত ব্রীজটি সংস্কারের দাবী জানাচ্ছি।
চৌফলদন্ডি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াজ করিম বাবুল বলেন,খুরুশকুলের জনগন নয় এখানকার ৬ টি ইউনিয়নের অন্তত ৭ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা এই খুরুশকুল ব্রীজ। খুরুশকুল ব্রীজ না হলে আমাদের কক্সবাজার শহরে যেতে ঈদগাহ হয়ে প্রায় ২০০ টাকা খরচ করে ২/৩ ঘন্টা সময় অপচয় করতে হতো। কিন্তু এখন খুব অল্প খরচে কম সময়ে শহরে পৌচানো যায়। আমরা বহুবার দাবী করেছি খুরুশকুল ব্রীজটি সংস্কার করার জন্য এছাড়া একই ব্রীজের পাশে আরো একটি বড় আকারের নতুন করে ব্রীজ করারও দাবীজানান তিনি।
কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল জানান,যে কোন এলাকার উন্নয়নের জন্য সেই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন পূর্বশর্ত। মূলত খুরুশকুল ব্রীজটি হওয়ার পরেই এসব এলাকার অভুতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে মানুষের জীবন মানের উন্নতী হয়েছে। তাই খুরুশকুল ব্রীজকে শুধু একটি স্থাপনা নয় একটি পরিবর্তনের বাহক হিসাবে চিন্তা করতে হবে। আমি জানি বর্তমানে ব্রীজটি খুবই ঝুকিপূর্ন অবস্থায় আছে। গত বছর ঝুকি কমাতে ব্রীজের কক্সবাজার অংশে লোহার গেইট দিয়ে ভারী গাড়ী চলাচল বন্ধ করলেও বর্তমানে ঝুকি কমেনি বরং দিন দিন বাড়ছে তাই দ্রুত এই ব্রীজকে নিয়ে দ্রুত একটি সমন্নিত উন্নয়ন পরিকল্পনা করা জরুরী।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সড়ক জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশরী পিন্টু চাকমা বলেন, খুরুশকুল ব্রীজটি কিছুটা ঝুকিপূর্ন এটা সঠিক,ইতি মধ্যে আমার ব্রীজটি পূর্ন সংস্কারের জন্য ডিপিপিতে পাঠিয়েছি সেখানে বাজেট পাস হলে খুরুশকুল ব্রীজের উপর আবারো নতুন করে কাজ হবে। তবে করে নাগাদ সেটা হতে পারে সেটা জানাতে পারেন নি তিনি।
এ ব্যপারে কক্সবাজার সদর রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন,খুরুশকুল ব্রীজটি ঝুকিপূর্ন এটা সঠিক। খুরুশকুলে বর্তমানে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প আশ্রয়ন প্রকল্প সহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তাই খুরুশকুল ব্রীজটি খুবই গুরুত্বপূর্ন। আমি দ্রুত এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন