এম আবুহেনা সাগর,ঈদগাঁও
সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহে কারিগরী ও ভোকেশনাল কোর্স চালু না থাকায় বহু শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান হচ্ছেনা। এতে গ্রামীন জনপদে বেকার যুবকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার কারিগরী শিক্ষার প্রতি বিশেষ নজর দিলেও জেলা শহর এবং পাশ্বর্বতী এলাকার তুলনার ঈদগাঁওর শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহের কারিগরী শিক্ষার চিত্র ভিন্ন। পাশ্বর্বতী রামু ও চকরিয়ার মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহে ভোকেশনাল কোর্স এবং আলাদা কারি গরী শিক্ষা প্রতিষ্টান থাকলেও বৃহত্তর ঈদগাঁওর ১৪/১৫টি প্রতিষ্টানে উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ভোকেশনাল কোর্স চালু নেই। এমনকি নেই কোন আলাদা কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্টান। যে কারনে কারিগরী শিক্ষার অভাবে বাড়ছে গ্রামীন জনপদে বেকারত্বের সংখ্যা। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন ও দক্ষ জনবল তৈরীর ক্ষেত্রে দেশের জন্য একটি অশনি সংকেত।
জানা যায়,বৃহত্তর এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্টান ঈদগাঁও আলমাছিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা, ঈদগাহ ফরিদ আহমদ ডিগ্রী কলেজ, ভারুয়া খালী আলিম মাদ্রাসা। এ প্রতিষ্ঠান গুলোর কোনটিতেই বৃত্তি বা কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। অথচ এ গুলোতে এইচএসসি ও স্নাতক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থী প্রতিবছর পড়ালেখা করছে। আর মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো হচ্ছে ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতন,নাপিতখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পোকখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,গোমাতলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,চৌফলদন্ডী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,ভারুয়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।
এসব প্রতিষ্ঠানের কোনটিতেই কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা তথা ভোকেশনাল কোর্স নেই। অন্যদিকে পালাকাটা গোলজার বেগম দাখিল মাদ্রাসা, খোদাইবাড়ী এ.জি লুৎফুল কবির বালিকা মাদ্রাসা, মেহেরঘোনা শাহ জব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ভোমরিয়াঘোনা হাজী শফিক দাখিল মাদ্রাসায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষা গ্রহণ করছে। পরবর্তীতে তাদের কেউ কেউ উচ্চ শিক্ষার দ্বারস্থ হচ্ছে। এ কোর্স চালু না থাকায় সম্ভাবনাময়ী অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও মেডিকেল, প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার উচ্চ স্তরে যেতে পারছেনা।
বিদ্যমান উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ও দাখিল মাদ্রাসা সমূহের কোনটিতে ভোকেশ নাল কোর্স চালু নেই। যার কারণে ঘনবসতিপূর্ণ ৬/৭টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেনা। কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এসএসসি,দাখিল, এইচএসসি, আলিম,স্নাতক বা ফাজিল পাস করেও কর্মসংস্থানের অভাবে অকালে ঝরে পড়ছে। যারা বৃত্তিমূলক, কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে জেলা সদর অথবা দূরবর্তী ভিন্ন উপজেলায় গিয়ে লেখাপড়া করতে হচ্ছে।
বৃহত্তর ঈদগাঁও এলাকাটি জেলা সদর থেকে আনুমানিক ৩৬ কিলোমিটার দূরে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হতে অনেক সময় দূরবর্তী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এ শিক্ষা গ্রহণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাছাড়া প্রথাগত ও পূঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিযোগিতামুলক চাকরির বাজার থেকে অনেকাংশে ঝরে যাচ্ছে। যার কারণে পরে তারা পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। চাকরির অভাবে বেকার থাকায় অনেকে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ার শংকা প্রকাশ করছে সচেতন মহল।
এলাকার সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান এবং বিশ্ববাজারে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। কারণ উক্ত শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে তারা নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারবে। এ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে এলাকায় বেকারের সংখ্যা অনেকাংশে কমে যাবে। বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশ ও সমাজের উন্নয়নে আত্ম নিয়োগ করতে পারবে।
জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন জানান,নারী শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হলেও তাঁর বিদ্যালয়ে ভোকেশনাল কোর্স নেই। এটি বাস্তবায়ন হলে নারী শিক্ষার্থীরা চাকুরির বাজারে নিজেদের দক্ষ ও যোগ্য করে তুলতে পারবে। নারীরা বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের আত্মকর্মসংস্থানের পাশা পাশি পরিবার-পরিজনের ভরণ-পোষণে সহায়তা ও নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারবে।
ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন কক্সবাজার প্রতিদিনকে জানিয়েছেন,অত্র স্কুলে কারিগরী কোর্স নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষক নুরুল ইসলাম,উক্ত বিদ্যালয়ে ভোকেশনাল কোর্স নেই। যদি ঈদগাঁওতে কারিগরী শিক্ষা চালু হয়,তাহলে ঝরে পড়ে শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ
সৃষ্টি হবে বলে জানান এ প্রতিবেদককে।
মন্তব্য করুন