এম. বেদারুল আলম
তিন কক্ষের একটি প্লাট। গতবছর মাসিক ভাড়া ছিল ৭ হাজার টাকা। এ বছর জানুয়ারি থেকেই ১০ হাজার টাকা দাবি করে বসেন মালিক। তাও আবার দারোয়ানের মাধ্যমে বিনা নোটিশে। শতকরা হিসাবে ভাড়া বাড়ানোর হার ৪৩ শতাংশ। আশ্চর্যজনক হলে ও সত্য যে শহরের রুমালিয়ারছড়ায় প্রবাসি মোঃ শফি তার ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে এভাবে অমানবিক উচ্চহারে ভাড়া আদায় করেছে। ভাড়া পূর্বের নির্ধারিত ৭ হাজার টাকা দিতে চাইলে উদ্বত্ত আচরণ করে যা মারাত্বক। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার পর্যন্ত গড়িয়েছে।
সরকারি অফিসের তৃতীয় শ্রেণির চাকুরে সাইফুল ( ছদ্মনাম)। শহরের বাহারছড়ায় ২ সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে ২ কক্ষের একটি বাসায় ৮ হাজার টাকায় ভাড়া থাকেন। সন্তানদের ভাল স্কুলে পড়ানোর জন্য বাসা ছাড়তে চ্য়ানি এ বছর। তাকে বাড়তি ২ হাজার টাকা দিয়ে জানুয়ারি থেকে নিরুপায় হয়ে থাকছে হচ্ছে। অর্থাৎ এখন বাসা ভাড়া দিতে হচ্ছে ১০ হাজার টাকা।
কোন ধরনের নিয়মনীতি না মেনে শহরের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে বাসা ভাড়া আদায় করছে বাড়ির মালিকরা। অথচ বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়াদের জন্য রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আইন। মালিকদের অযাচিত ভাড়া বৃদ্ধি, অশালিন আচরন নিয়ন্ত্রণ, সুসর্ম্পক বজায় রাখার জন্য রয়েছে যুৎসয় আইন। বাড়ির মালিকরা সকল নিয়মকে অমান্য করে জোর করে বছর বছর ছাপিয়ে দেয় বাসা ভাড়া বৃদ্ধির খড়্গ। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষ। তাদের থাকছে হচ্ছে নিরুপায় হয়ে ভাড়া বাসায়। গত কয়েক বছরে কক্সবাজারের বিশেষ কিছু এলাকায় বাড়ি ভাড়া আশংকাজনকহারে বাড়িয়ে দিয়েছে বাড়ির মালিকরা।প্রশাসনের নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে বাড়ির মালিকরা।
অপরদিকে ইচ্ছেমত বাড়ি ভাড়া আদায় এবং মালিক ভাড়াটিয়া উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় রয়েছে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯১। আইনটি ( ২)ধারা ২৩,২৪, ২৫ তে অতিরিক্তি ভাড়া আদায়েরদন্ড (ক) ধারা ৮বা ৯ ধারায় কারণ ব্যতরিকে বা নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া বাড়া বৃদ্ধি করলে আদায়কৃত অতিরিক্ত ভাড়ার দ্বিগুন অর্থদন্ড, পরবর্তী প্র্যত্যেকবারের জন্য ৩গুন অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন বাড়ির মালিক। প্রত্যেকবারের অপরাধের জন্য এক মাসের ভাড়ার অতিরিক্ত যে টাকা আদায় করা হয়েছে তার অতিরিক্ত তিনগুন অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন। প্রত্যেক বারের জন্য ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে বাড়ির মালিককে।
এদিকে বাড়ি ভাড়া বেশি আদায়ের জন্য দক্ষিন রুমালিয়ারছড়ার ইব্রাহিম মঞ্জিলের মালিক ফরিদ, ও দারোয়ান মোক্তারকে আগামি ১৪ ফেব্রয়ারি বেলা ১২ টায় জেলা প্রশাসকের সহকারি কমিশনার সেলিম শেশের কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নোটিশ প্রদান করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভাড়াাটিয়া জেলা প্রশাসকের ত্রাণ শাখার ( নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) অফিস সহকারিকে ৪৩ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি অনাদায়ে অশালিন আচরণের।
এভাবে নিয়ম বর্হিভূতভাবে বিনা নোটিশে ইচ্ছেমত বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির কারনে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপ ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
মন্তব্য করুন