মাহাবুবুর রহমান.
আজ ২৯ রজমান ৪ জুন(মঙ্গলবার) চাঁদ দেখা গেলে কাল ৫ জুন বুধবার ঈদ। আজ সন্ধায় দেশের অনেকেরই চোখ থাকবে পশ্চিম আকাশে। খোঁজ রাখবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে। আজ চাঁদ দেখা গেলে আগামীকাল পবিত্র ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। আর না দেখা গেলে বাড়বে এক দিন রোজা, ঈদ হবে পরদিন ৬ জুন বৃহস্পতিবার।
এদিকে প্রতি বছরের মতো এবারও কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদুল ফিতরের প্রথম ও প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত সকাল সাড়ে ৮ টায়। ঈদের প্রথম ও প্রধান জামাতে ইমামতি করবেন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুল হক। দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের দ্বারে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এই আনন্দের দিন ধনী ও গরীব ভেদাভেদ ভুলে ঈদের নামাযে এক কাতারে শামিল হবে সর্বস্তরের মানুষ।
কক্সবাজার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক ফাহমিদা বেগম বলেণ,আজ কক্সবাজার জেলা পর্যায়ে চাঁদ দেখা কমিটির সভা হবে। সন্ধ্যায় আমরা বীচের লাবনী পয়েন্টে চাঁদ দেখা কমিটির সকল সদস্য থাকব। সেখান থেকে জেলার তথ্য কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দেওয়া হবে। এছাড়া দেশের যে কোন স্থানে পবিত্র সাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে বুধ বার ঈদুল ফিতর হবে।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান,ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশাল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান। কেন্দ্রীয় এই ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে অন্তত ১০ হাজার হাজার মুসল্লিহ নামাজ আদায় করতে পারবেন। এখানেই জেলা প্রশাসক, সংসদ সদস্য, রাজনৈতক নেতাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে এক কাতারে নামাজ আদায় করবেন। ৩ জুন বিকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদে জামায়াতের জন্য সুসজ্জিত করে প্রস্তুত করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানকে। পুরো মাঠে বাশ দিয়ে প্যান্ডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তিনি জানান পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান সার্বক্ষনিক ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতির বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছেন।
এখন ওপর দিয়ে ত্রিপল টাঙ্গানোর কাজ চলছে। বৃৃষ্টিতে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য ওপরে দেওয়া হচ্ছে মোটা ত্রিপলের ছাউনি। পানি নিষ্কাশনের জন্য রাখা হয়েছে ড্রেনেজের ব্যবস্থা। কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানের চারপাশ জুড়ে সার্বিক নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকবে আইনশৃংখলা বাহিনী। এ ব্যপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন,ঈদ জামাত সর্ব খেত্রে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নেওয়া আছে। এ সময় তিনি ঈদগাহ মাঠে আসার সময় শুধু মাত্র জায়নামাজ ছাড়া অন্য কোন কিছু সাথে না আনার জন্য মুসল্লিদের প্রতি অনুরোধ জানান।
আজ সন্ধ্যায় দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে বেজে উঠবে চিরচেনা সেই সুর ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’। পবিত্র ঈদ মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে এবং সম্প্রতি বৃদ্ধি করে। বিশ্ব মুসলিম একই আত্মার বন্ধনে আবদ্ধএ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ঈদ। ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলিয়ে দিয়ে এক কাতারে শামিল করিয়ে দেয় এ উৎসব। হিংসা-বিদ্বেষ ও অহংকারসহ অন্যায় ও পাপাচার মুছে দিয়ে নতুন করে সুখী পবিত্র জীবন যাপন শুরু করার তাগিদ দেয় ঈদ। ঈদের দিন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। একেকজন একেকভাবে আনন্দ উপভোগ করে থাকে। বিশেষ করে ছোট ও তরুণ-তরুণীদের আনন্দ উপভোগটা সবারই নজরে পড়ে। তারা ঈদের দিন ভোরে গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পরে মিষ্টিমুখ করে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে।
এদিকে ঈদকে ঘিরে এখনো মার্কেট গুলোতে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং এখন বেশি ভীড় আছে জুতা সেন্ডেল গুলোর দোকানে আর যারা এখনো কাপড় কেনা শেষ করতে পারেনি কারা কাপড়ের দোকান গুলোতে ভীড় করছে। এছাড়া শহরের প্রসাধনী দোকান গুলোতেই এখন তীল ধারনের ঠাই নেই মেয়েরা সেখানে কাপড়ের সাথে ম্যাচিং করে চুড়ি থেকে শুরু করে সব কিছু কিনছে। আবার টুপি আতরের দোকানেও দেখা গেছে মানুষের ভীড়। শহরের বাজার ঘাটায় একটি আতরের দোকানের ক্রেতা টেকপাড়ার আবছার কামাল বলেণ,আমি সব সময় আতর ব্যবহার করে আর ঈদের সময় বেশি ব্যবহার করি তাই এখানে ভাল মানের সুগন্ধি আতর কিনতে এসেছি। এখানে আসা আরো কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারাও আতর ব্যবহার করতে ভালবাসেন তাই পছন্দের আতর কিনতে এসেছেন।
এদিকে জেলাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেণ,ঈদুল ফিতর আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় পুরুস্কার। ঈদের দিন যেভাবে আমার সবার সাথে ভাল ব্যবহার করে সুন্দর ভাবে মিলেমিশে আনন্দ ভাগাভাগি করে থাকি সারা বছর সেভাবে প্রতিটি মানুষ মিলেমিশে সুন্দর ভাবে থাকার শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। একই সাথে রমজানের এই একটি মাস যেভাবে সিয়াম সাধনা করে যে শিক্ষা আমরা পেয়েছি বাকি ১১ মাস সেই শিক্ষাকে কাজে লাগাতে পারলে মানব জীবনে আর কোন সমস্যা থাকবে না।
মন্তব্য করুন