মাহাবুবুর রহমান.
আগে আসা বিভিন্ন ভাবে ভোটার তালিকায় স্থান পাওয়া রোহিঙ্গাদের তথ্য সংগ্রহে কাজ করবে নির্বাচন কমিশন। খুব দ্রুত একটি বিশেষ কার্যক্রম নেওয়া হবে একই সাথে আগে আসা বা অন্যকোন ভাবে রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার তথ্য পেলে সেটা নির্বাচন অফিসে জমা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মোখলেছুর রহমান।
এদিকে কক্সবাজারের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিপুল সংখ্যাক রোহিঙ্গা ভোটারদের সনাক্ত করে তাদের ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার দাবী জানিয়েছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল। এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কক্সবাজার পৌর এলাকার মধ্যে সব চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা ভোটার আছে ৭,৮,৯,১০ ও ১২ নাম্বার ওয়ার্ডে এর মধ্যে তুলনা মূলক ৭ নাম্বার ওয়ার্ডে বেশি। এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্য মতে এবিসি ঘোনা এলাকায় আবদুর রশিদ,খলিল,মোঃ আলী মাঝি,হাফেজ আহাম্মদ,ডাঃআইয়ুব,আবদুস সালাম,মৌলবী আবু শামা,সরওয়ার,মোঃ তালেব(প্রকাশ দয়ার বাপ) শুক্কুর,রফিক,মৌলবী আমজাদ, রশিদ ড্রাইভার, মোহাম্মদ হোসন এরা সবাই আগে আসা রোহিঙ্গা যারা ইতি মধ্যে ভোটার আইডি কার্ড পেয়েছে। এছাড়া টেকনাফ পাহাড় এলাকায় থাকা সৈয়দ হোসেন,আবদুল হামিদ, মোঃ সোলতান,আবদুল্লাহ,আবদুল লতিফ,আশরাফ। ফাতের ঘোনার মোঃ রফিক সোনা মিয়া, মৌলবী নজিবুল হক,সোনা মাঝি, জিয়া নগর এলাকার রুহুল আমীন,শুক্কুর,পূর্ব পাহাড়তলী এলাকার লালু মাঝি,আরিফ উল্লাহ,ইসলামপুর এলাকার হামিদ,মৌলবী নুর মোহাম্মদ,দিল মোহাম্মদ,ইয়াকুব,বাবুল,নুর মোহাম্মদ,আবদুল্লাহ,ইসলাম খাতুন,মৌলবী আবদুল মালেক,মৌলবী নুর হোসাইন,কাশেম মাঝি,মাষ্টার হাবিব উল্লাহ,হালিমা পাড়া সত্তর ঘোনা এলাকার মরিয়ম,মুজিবুর রহমান,সুলতান মোহাম্মদ ছিদ্দিক,বশর প্রকাশ ডাকাত বশর শফিক,করিম উল্লাহ। রহমানিয়া মাদ্রাসা এলাকায় জহির হাজী,মোহাম্মদ, আবু ছালেহ,ইসমাঈল,আমীর,মৌলবী এমদাদ। এদিকে বাদশা ঘোনা এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে এখানে নুরুল আমিন নামের এক স্বীকৃত রোহিঙ্গা বর্তমানে সায়মন আমিন নামে পরিচিত সে ৯ নং ওয়ার্ডে বসাবাস করলেও সে এলাকা ভোটার হতে না পেরে ৪ নং ওয়ার্ড থেকে ভোটার হয়েছে। বর্তমানে বার্মাইয়াদের নিয়ে একটি সমাজ করেছে এবং থানায় দালালি ও করে। এছাড়া ছৈয়দুল আমিন,সিরাজ মিস্ত্রি, নুরুল ইসলাম মিস্ত্রি যাদের নামে এর আগেও রোহিঙ্গা ভোটার করা নিয়ে মামলা আছে। হাবিবুর রহমান সহ আরো বেশ কয়েকজন স্বীকৃত রোহিঙ্গা আছে যারা ১৫/২০ বছর আগে এসে বর্তমানে ভোটার হয়েছে। এছাড়া বাঁচা মিয়ার ঘোনাএলাকার ডাঃ আইয়ুবের পুরু পরিবার,ইলিয়াছ পিতা মৌলবী আমজাদ, মোস্তফা,মৌলবী নজির,আবদুর রহমান ড্রাইভার(আশুরঘোনা)আমির হোসেন প্রকাশ ভুলু, দক্ষিন ডিককুল এলাকা জামাল হোসেন,জাফর আলম,সাব মেরিন ক্যাবল অফিস সংলগ্ন নুরুল ইসলাম,৬ নং ওয়ার্ডে বড়–য়া পাড়া এলাকার শওকত,শুক্কুর,আবদুল সালাম সহ অনেক রোহিঙ্গা যারা নানান ভাবে ইতি মধ্যে ভোটার হয়ে গেছে।
এদিকে সম্প্রতী চট্টগ্রাম নির্বাচন অফিসের ভয়াবহ জালিয়াতি করে রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার তথ্য প্রমাণ পেলে সে অনুযায়ী কক্সবাজারের প্রায় ৬ শত রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই থেকে কক্সবাজারের আগে আসা বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার বিষয়ে অনেকটা সচেতন হয়েছে সাধারণ মানুষ। এ ব্যপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন কক্সবাজারের সভাপতি প্রফেসর এম এ বারী বলেন, বর্তমানে ক্যাম্প থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে খোঁজ খবর রাখলে চলবে না। যারা ২০/২৫ বছর আগে এসে এখানে বৈবাহিক বা জমি কিনে অনেকে আত্বীয়তা সুযোগে অনেকে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড পেয়ে গেছে সে সব রোহিঙ্গাদের সনাক্ত করে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিলের উদ্দোগ নিতে হবে। এটা কোন বড় ব্যাপার না কারন পার্শবর্তি দেশ ভারতের আসাম রাজ্যে ৬৫ বছর আগে আসাদের যদি নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারে তাহলে আমার কেন পারবোনা। আমি মনে করি দ্রুত এই উদ্দোগ সরকারের নেওয়া উচিত।
এপিপি এড,তাপস রক্ষিত বলেন, সরকার সম্প্রতী নিজেরাই তদন্ত করে পেয়েছে অনেক রোহিঙ্গা এনআইডি ভূক্ত হয়ে গেছে। আমাদের পরিস্কার ধারনা এখানে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা ইতি মধ্যে ভোটার হয়ে গেছে তারা এখন অনেকে প্রভাবশালী। অনেকে রাজনীতি থেকে শুরু করে সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করছে। আবার অনেকে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকরী করছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে তাই দ্রুত আগে আসা সে সব রোহিঙ্গা নাগরিকত্ব পেয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করে তাদের নাগরিকত্ব বাতিলের উদ্দোগ নিতে হবে।
এ ব্যপারে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নব নিযুক্ত পিপি এড,মোঃ ফরিদুল আলম বলেন,দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গা বাদ দেওয়া খুবই জরুরী একই সাথে যারা এই সব কাজে সহায়তা করেছে তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
এ ব্যপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস,এম শাহাদাৎ হোসেন বলেন,যে কোন অবস্থায় কোন রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে সেটা কেউ তথ্য দিলে আমরা সেটা বাতিলের উদ্দোগ নেব। আর গণহারে রোহিঙ্গা সনাক্ত করার কর্মসূচীর বিষয়টি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সিদ্ধান্ত আসতে হবে। তবে কোথাও কোন রোহিঙ্গার খবর পেলে আামদের জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।
রোািহঙ্গাদের ভোটার হতে সহায়তা বা সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় আনার কাজ ইতি মধ্যে শুরু হয়ে গেছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেণ,যত আগেই আসুক কোন রোহিঙ্গা ভোটার হয়ে থাকলে সেটা বাতিল হবে। এই বিষয়ে কোন ছাড় নেই। এবং রোহিঙ্গা ভোটার বিষয়ে সামনে আরো নিদের্শনা আসতে পারে।
মন্তব্য করুন