মাহাবুবুর রহমান.
চলমান ইয়াবা বিরুধী অভিযানে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়ছে,ইতি মধ্যে সরকারের প্রচেস্টায় ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ি আতœসমপর্ণ করেছে এছাড়াও টেকনাফে ইয়াবা বিরুধী অভিযান অব্যাহত থাকায় বন্দুকযুদ্ধে গত ১৩ দিনে ৭ জন ইয়াবা কারবারি নিহত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আরো ইয়াবা কারবারিরা আতœসমর্পণ করার চিন্তা করছে, তাই পুরু বিষয়টিকে ইতি বাচক হিসাবে দেখছে কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষ তবে অধরা রয়ে যাচ্ছে কক্সবাজারের শহরের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়িরা। সচেতন মহলের দাবী টেকনাফ উখিয়া ভিত্তিক ইয়াবা ব্যবসায়িরা প্রশাসন সহ সবার মাঝে চিহ্নিত তাই তাদের তালিকাও করেছে সরকার কিন্তু এসব ইয়াবা ব্যবসায়িদের সাথে যৌথভাবে ইয়াবা ব্যবসা করে কক্সবাজারের শহরের অনেকে আজ কোটি পতি একই সাথে তাদের অনেক নাম ডাক, অনেকে ইয়াবা ব্যবসায়ি হিসাবে সবারমাঝে পরিচিত কিন্তু তারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই এসব ইয়াবা ব্যবসায়িদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল।
কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সেলিম,নজরুল ইসলাম সহ অনেকে বলেন,ইয়াবার বদনামের কারনে কক্সবাজারের মানুষ হিসাবে এখন লজ্জা লাগে,আমাদের এলাকাটি রোহিঙ্গা উদ্দ্যেশিত হওয়ায় অনেক আগে থেকে এখানে ইয়াবা ব্যবসার গুড়াপত্তন হয়েছে। ফলে এখানে বেশির ভাগ যুব সমাজ ইয়াবা আসক্ত আবার অনেকে ইয়াবা বেচাকেনা এবং পরিবহণে ব্যস্ত। আমরা নিশ্চিত প্রশাসনও জানে এখানে কারা ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। শুনেছি বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়িরা খুব আতংকগ্রস্থ ফলে বেশির ভাগ ইয়াবা ব্যবসায়ি এখন আর টেকনাফ বা উখিয়াতে নেই কিন্তু একেবারে অধরা থেকে গেছে কক্সবাজার শহরের খ্যাতনামা ইয়াবা ব্যবসায়িরা। পাহাড়তলীর ইয়াবা ব্যবসায়িা এখনো বীরদর্পে হাটে এবং সন্ধ্যা হলেই উঠতি বয়সের যুবকদের দিয়ে ইয়াবা হাট বসায়।
টেকপাড়া এলাকার মোহাম্মদ হাশেম,আবু তাহের,আবছার উদ্দিন সহ অনেকে বলেন,বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়িদের দমন করার জন্য সরকার যে উদ্দ্যেগ নিয়েছে সেটা আরো বহু বছর আগে নেওয়ার দরকার ছিল।তবুও শেষ বেলাতে এসে সরকারে কঠোর হয়েছে সেটা ভাল। আমরা শুনেছি টেকনাফে এখন কোন ইয়াবা ব্যবসায়িদের প্রকাশ্য দেখা যায় না। কিন্তু টেকনাফের সেই ইয়াবা ব্যবসায়িদের সাথে যারা পাল্লা দিয়ে শহরের অসংখ্য যুবক ইয়াবা ব্যবসা করে আজ শতকোটি টাকার মালিক তারা এখনো বুক ফুলিয়ে হাটছে এখন তারা সমাজে বিভিন্ন মসজিদ,মাদ্রাসা,সমাজ কমিটিতে টাকা এবং ক্ষমতা দিয়ে পদপদবি নিয়ে ভাল মানুষ সাজতে চাইছে। তারা বলেন,টেকপাড়া মসজিদ সড়ক,দোসরী পাড়া,হাঙ্গরপাড়া,মাঝিরঘাট সংলগ্ন বাকঁখালী নদীর পাড় এলাকাতে বেশ কয়েকজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ি আছে যাদের এলাকার মানুষ প্রশাসন সবাই চিনে কিন্তু তারা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। বরং তারা এখন অনেকে সরকারি দলের বিভিন্ন অংগ সহযোগি সংগঠনের পদপদবী ব্যবহার করে নেতাবনে গেছে। কিন্তু তারা এখনো ইয়াবা ব্যবসা চালু রেখেছে ফলে এখনো অনেক যুব সমাজ ধ্বংসের পথ থেকে ফিরে আসতে পারছেনা। তাই উখিয়া টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়িদের মত শহরের এসব ইয়াবা ব্যবসায়িদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা দরকার।
এদিকে বাহারছড়া এলাকার নাজিম উদ্দিন,জসিম উদ্দিন বলেন,বাহারছড়া এলাকাতে অন্তত শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ি আছে,এর মধ্যে কিছু বড় ডিলার আর কিছু আছে খুচরা ব্যবসায়ি আর ইয়াবা আসক্ত আছে অসংখ্য। মাঝে মধ্যে প্রশাসন অভিযান চালালেও তারা বেপরোয়া ভাবে ইয়াবা ব্যবসা করেই চলেছে। অনেকে ইতি মধ্যে ইয়াবার টাকা দিয়ে ৪/৫ তলা বিল্ডিং,নামে বেনামে ব্যবসা বানিজ্য করে ফেলেছে।
এদিকে শহরের দক্ষিন রুমালিয়ারছড়াকে ইয়াবা ব্যবসায়িদের ডিপু বলছেন স্থানীয়রা তাদের দাবী এই এলাকাতে কমপক্ষে ৫ শতাধিক পুরুষ এবং নারী ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। অনেকে ইতি মধ্যে অবৈধ টাকার প্রভাবে সমাজে প্রভাব প্রতিপত্তি করে ফেলেছে। আর এই ইয়াবা ব্যবসার কারনে বৃহত্তর রুমালিয়ারছড়াতে হত্যা,ছিনতাই,মারামারি সহ সব ধরনের ঘটনা লেগে থাকে।
এ ব্যপারে আলাপ কালে রামু কলেজের অধ্যাপক আবু তাহের,জহিরুল ইসলাম বলেন,কয়েক বছর আগেও কক্সবাজারের মানুষ হিসাবে পরিচয় দিলে অন্যজেলার মানুষ আমাদের সাথে আলাদা ভাবে খাতির করতে চাইতো কিন্তু এখন কক্সবাজারের পরিচয় দিলে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং হাস্যরস করে বলে ভাই ইয়াবা আছে নাকি। এটাযে আমাদের জন্য কতলজ্জার সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তাই সরকার দীর্ঘদিন পরে হলেও ইয়াবার বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষনা করেছে সে জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছি একই সাথে শুধু টেকনাফ উখিয়া নয় পুরু জেলার বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের ইয়াবা ব্যবসায়িদেরও আইনের আওতায় আনা দরকার। কারন শহরে যারা তাদের এজেন্ট বা গডফাদার আছে তারা আগে গ্রেফতার হলে বাকিরা এমনিতেই দূর্বল হয়ে পড়বে।
এ ব্যপারে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেণ,এখন সময় এসেছে কক্সবাজারের মানুষের ইয়াবার বদনাম ঘুছিয়ে মাথা তুলে দাড়াবার। ১৬ ফেব্রুয়ারী ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ি আতœসমর্পণ করেছে এখন আরো ইয়াবা কারকারিরা আতœসমর্পণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। সবাই এখন বুঝতে পেরেছে রেহাই নেই। গ্রাম বা শহর বলে কথা নেই সব ইয়াবা ব্যবসায়িদের সময় থাকতে সৎপথে ফিরে আসতে হবে না হলে পরিনতি কঠিন হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন