মাহাবুবুর রহমান.
কক্সবাজারের বিতর্কিত এনজিও সংস্থা পালস বাংলাদেশকে ২ বছর পর আবারো নিবন্ধন নবায়ন করেছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। খোদ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের দাবী নিয়ম বর্হিভূত ভাবে গোপনে বিপুল টাকার লেনদেন করে উপ পরিচালক মেয়াদোর্ত্তীন পালস বাংলাদেশকে নিবন্ধন করেছে।এতে উক্ত দপ্তরের কর্মকর্তাদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
কক্সবাজার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে কক্সবাজারে এক সময় জেলায় অন্তত দেড় শতাধিক সংগঠন এবং সংস্থা নিবন্ধন ছিল। তবে ৩১ আগষ্ট ২০১৭ সালের পরে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৪০ টির মত সংস্থা নিবন্ধন প্রকৃয়া সম্পন্ন করেছিল। সে সময় পালস বাংলাদেশের প্রধান সাইফুল ইসলাম কলিমকে আমরা অনেক বার ফোন করে নিবন্ধন নবায়ন করার জন্য বলেছিলাম। তবে তিনি সেটা আমলে না নিলে নিবন্ধন করেননি। সম্প্রতী উক্ত পালস বাংলাদেশ এনজিও নিয়ে বহু বিতর্কিত কর্মকান্ডের তথ্য বহুল সংবাদ দৈনিক কক্সবাজারে প্রকাশ হওয়ার পরে। হঠাৎ করে উক্ত পালস বাংলাদেশের নিবন্ধন নবায়ন করার জন্য তাড়াহুড়া করে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না হওয়ায় আমরা উনার কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে নিবন্ধন করিনি। যেহেতু উক্ত সংগঠন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেশ কিছু কাজ করেছে যা করার এখতিয়ার উক্ত সংগঠন রাখেনা। এর মধ্যে আমরা জানতে পেরেছি কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে উক্ত সংস্থার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এর মধ্যে কি ভাবে সেই বিতর্কিত সংস্থার নিবন্ধন নবায়ন হতে পারে। বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাদের দাবী রামু উপজেলার একজন ভাইস চেয়ারম্যান এই কাজের জন্য বিপুল টাকা নিয়ে তদবির করেছে। যার প্রেক্ষিতে উপ পরিচালক মোটা অংকের টাকা নিয়ে ম্যানেজ হয়ে ১১ সেপ্টেম্বর নিবন্ধন নবায়ন করেছেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন,আমাদের কাছে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ এসেছে যে সমস্ত সংগঠন বা সংস্থা আগে নিবন্ধন ছিল তাদের নিবন্ধন নবায়ন করতে সেই কারনে পালস বাংলাদেশের নিবন্ধন নবায়ন করা হয়েছে। আপনারা আসলে আমি প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখাতে পারবো।
এদিকে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ও অর্থ আ.ন.ম আহামদ আলী জানান যেহেতু একটি সংস্থা নিয়ে প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বা বিভিন্ন কথা আসছে তাই হঠাৎ করে এটার নিবন্ধন করার আগে চিন্তা করা উচিত ছিল। তবুও আমি কাগজ পত্র না দেখে কোন মন্তব্য করতে পারছিনা তবে কেউ অভিযোগ করলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে জানা গেছে আজ জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন আজ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে যাওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে পালস বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সাইফুল ইসলাম কলিমের মোবাইলে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সূত্রমতে, এনজিও ব্যুরো থেকে শুরু করে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে বোকা বানিয়ে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা বিদেশি ফান্ড এনে লোপাট করেছে এনজিও পালস বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সংকটের ডোনেশনের টাকায় সম্পদের পাহাড় গড়েছেন পালস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক (প্রোগ্রাম) আতিক উদ্দিন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা। মাত্র দুই বছরে বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক তারা। অথচ এই এনজিও’র ব্যবহৃত সকল সনদ-ই জাল। সরকারের কোন দপ্তরে পালস বাংলাদেশ নামে কোন এনজিও’র নিবন্ধন নেই। জালিয়াতির মাধ্যমে এতদিন প্রশাসনকে ধোকা দিয়ে এসেছে তারা।
পালস বাংলাদেশ এনজিও’র জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অথচ এতদিন জাল সনদগুলো খতিয়ে দেখারও প্রয়োজন বোধ করেনি। প্রশাসনের উদাসিনতা নিয়ে সমালোচনা করছেন সচেতন মহল। তদন্তে কোন ধরণের নয়ছয় না করার দাবী সচেতন মহলের।
মন্তব্য করুন