শিরোনাম :
কক্সবাজারে মানবপাচার চক্রের ৪ সদস্য আটক : উদ্ধার ৭ বঙ্গবন্ধু বঙ্গমাতা ফুটবল : চ্যাম্পিয়ন মহেশখালী রানারআপ চকরিয়া বর্ণাঢ্য আয়োজনে ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন সাংবাদিক মাহীকে ভুল চিকিৎসা: তত্ত্ববধায়ক মোমিনকে বদলি, তিন সদস্য কমিটি গঠন জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত¡বধায়ক ডা: মুমিনের বদলী নতুন আসছেন ডা:মং টিংঞো ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ : ঘোনারপাড়ার নির্মল ধরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা কক্সবাজারে নকল কোর্ট ফি বিক্রি চক্রের ২ জন আটক রোহিঙ্গাদের প্রতিরোধে স্থানীয়দের সর্বাত্মক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে সিরাজ আহমদ নাজিরের ২০ তম মৃত্যু বার্ষিকী কক্সবাজার ৩ আসনে প্রার্থী হিসাবে ঘোষনা দিলেন আতিক উদ্দিন চৌধুরী

সাগরে গোসলের নিয়ম মানছে না পর্যটকরাঃ বাড়ছে দূর্ঘটনা

রির্পোটার:
  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, জুন ৯, ২০১৯
  • 722 বার সংবাদটি পড়া হয়েছে

কক্সঃ৭১ রিপোর্ট
ঈদের ছুটিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাখ লাখ পর্যটক ভীড় করেছে সমুদ্রনগরী কক্সবাজারে। ঈদের পরদিন থেকেই পর্যটকের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে। রবিবার (৯ জুন) সমুদ্রসৈকতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সমুদ্রসৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এই তিন পয়েন্টের কোথাও পা ফেলারও জায়গা নেই। গোসলের জন্য নির্ধারিত নিরাপদ স্থানের বাইরে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানেও গোসল করছে হাজার হাজার পর্যটক।
লাইফগার্ড কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সৈকতের লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্টে গোসল করার জন্য নির্ধারিত নিরাপদ জোন রয়েছে। এই দুই পয়েন্টের নিরাপদ জোনকে লাল-হলুদ পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। চিহ্নিত এলাকার বাইরে পুরো সমুদ্রসৈকত গোসলের জন্য অনিরাপদ। কিন্তু পর্যটকরা গোসল করার ক্ষেত্রে নিরাপদ বা অনিরাপদ বিবেচনায় নিচ্ছে না। তাদেরকে মানানোও যাচ্ছে না। নিরাপদ জোনে জায়গা না পেয়ে অনিরাপদ জোনেও পর্যটকের উপচেপড়া ভীড়।
সী সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র লাইফগার্ড আদ্রাম ত্রিপুরা জানান, শুক্রবার থেকে সৈকতে পর্যটকের উপস্থিতি বেড়ে গেছে। বিশেষ করে আজ (শনিবার,বরিবার) সকাল থেকে পর্যটকের উপস্থিতি রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সৈকতের কলাতলী থেকে লাবণী পর্যন্ত পর্যটকে টুইটুম্বুর। আনুমানিক ৪ লক্ষাধিক পর্যটক সৈকতে এসেছে। বেশির ভাগই গোসল করে সময় পার করছেন। তবে গোসলের ক্ষেত্রে কোন নির্দেশনা মানছেন না তারা।
তিনি আরও বলেন, সাগরে বর্তমানে ৩ নাম্বার সতর্ক সংকেত চলছে। এরফলে সাগর উত্তাল। তাছাড়া পর্যটকদের গোসল করার জন্য দুই পয়েন্টে দুটি নিরাপদ জোন রয়েছে। সেই নিরাপদ জোনে জায়গা না পেয়ে পর্যটকরা অনিরাপদ জোনেও গোসল করছে। বিশেষ করে ডায়বেটিক এবং কলাতলী পয়েন্ট গোসলের জন্য সম্পূর্ণ অনিরাপদ। কিন্তু সেখানেও রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি। পতাকা টাঙিয়ে, মাইকিং করেও নির্দেশনা মানানো যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। বেশি বারণ করলে অনেক পর্যটক আমাদের মারতে আসে।
সমুদ্রসৈকতে আগের মত এখন লাইফগার্ড কর্মীও নেই। সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করে সী-সেইফ লাইফগার্ড। তাদের সদস সংখ্যা ২৮ জন। তিন পয়েন্টে ৮ জন করে সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করে। লাবণী পয়েন্টে তদারকির দায়িত্বপালন করে ইয়াছির লাইফগার্ডের কয়েকজন কর্মী। এত বিপুল সংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে অল্প সংখ্যক লাইফগার্ডকর্মী।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে সুগন্ধা পয়েন্টের দক্ষিণ পাশে নিরাপদ জোনের বাইরে গোসল করা অবস্থায় কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এত মানুষের মাঝে সতর্ক বা নিরাপদ জোনের সংকেত চিহ্ন লক্ষ্য করা যায় না। তাছাড়া যেখানে নিরাপদ জোন দাবী করা হচ্ছে, সেখানে পা ফেলারও জায়গা নেই। তাই তারা বাধ্য হয়ে সেখানে গোসল করছেন।
মিনহাজুল ইসলাম নামে নারায়নগঞ্জের এক পর্যটক জানান, সোমবার সকালে চলে যাবো। যা করার আজকের মধ্যেই করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে অনিরাপদ জোনে গোসল করতে হচ্ছে। তবে আমরা কূলের কাছাকাছি থেকে সতর্কভাবে সাগরে নেমেছি।
বিপুল পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতিতে বালিয়াড়ি আর সমুদ্র একাকার। এই বিপুল পর্যটককে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। তবে প্রশাসনের দাবী এখন পর্যন্ত তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন শাখা) সাইফুল ইসলাম জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বীচকর্মীরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে সমুদ্রসৈকতে সারাক্ষণ অবস্থান করছে মোবাইল কোর্ট।
তিনি আরও জানান, অনিরাপদ জোনে গোসল না করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। পানিতে নেমেও সতর্ক করা হচ্ছে। উৎসুক পর্যটকেরা কোন নির্দেশনা মানছেন না। তবে তারা নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে অবস্থান করছেন। তাই এখন পর্যন্ত কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। দুর্ঘটনা এড়াতে লাইফগার্ড সব সময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিষ্ট পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান বলেন,গত ৩ দিনে বেশ কয়েকজন পর্যটককে মূমুর্ষ অবস্থায় সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনি সহ লাইফ গার্ডের সদস্যরা বারণ করেও পর্যটকদের অনিরাপদ ভাবে সাগরে নামা থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। তবুও আমরা বসে নেই সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই বিষয়ে আরো সংবাদ দেখুন
© All rights reserved © 2021 cox71.com
Developed by WebArt IT