মাহাবুবুর রহমান.
পত্রিব রমজান মাসে ৬৫ দিনের অবরোধে পড়ে সাগরে যেতে না পারলে বাজারে মাছের তীব্র সংকট সৃস্টি হবে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা একই সাথে জেলার ২ লাখের বেশি মৎস্যজীবীর ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে যাবে বলে জানান মৎস্যজীবীরা। তাই সরকারের উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবরোধের সময় আরো কমিয়ে এনে তা রমজানের পরে দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন মৎস্যজীবীরা।
কক্সবাজার শহরের কালুর দোকান এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ি নজরুল ইসলাম বলেন,আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি, প্রতিদিন শহরের মৎস্যফিসারীতে গিয়ে মাছ কিনে এনে বিকালে বা রাতে বিক্রি করে কোন মতে সংসার চালায়,কিন্তু এখন সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এতে চরম বিপদে পড়বো আমাদের মত সাধারণ মৎস্যজীবীরা। কারন সামনে ঈদ যদি ব্যবসা বানিজ্য করতে না পারি তাহলে পরিবার পরিজন কে ঈদ আনন্দ কিভাবে দেব। এছাড়া আমার দীর্ঘ ৩৫ বছর ব্যবসায়িক জীবনে কোন দিন রমজান মাসে সাগরে বোট যেতে পারবেনা এরকম সিন্ধান্ত শুনিনি। আমার মতে বিষয়টি সরকারের চিন্তা করা দরকার এখনো সময় আছে এরকম কঠিন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলে সাধারণ মৎস্যজীবীদের উপকার হবে।
বাহারছড়া বাজারের ব্যবসায়ি আবদুল হামিদ বলেন,২০ মে থেকে সাগরে বোট যেতে পারবে না। শুনে খুব অবাক হয়েছি কারন এবারেই প্রথম ৬৫ দিন অবরোধ দিয়েছে সরকার।তিনি বলেন,এতে বাজারে চরম মাছের সংকট সৃস্টি হবে,তাছাড়া বর্তমানে পবিত্র রমজান মাস চলছে মানুষ একটু ভালমন্দ খেতে চায় সেখানে যদি সাগরের মাছই না থাকে তাহলে খাবে কি,তাছাড়া যে অজুহাতে সরকার সাগরে বোট যেতে বারণ করছে আমার মতে প্রজণন মৌসুম আরো দেরিআছে,সেটার জন্য এত আগে থেকে সাগরে অবরোধ দেওয়ার প্রয়োজন নাই,জুন মাসের মাঝামাঝি দিলেও হতো কিন্তু এত আগে থেকে সাগর বন্ধ করে দেওয়াতে সাধারণ মানুষ বেশি কষ্ট পাবে।এছাড়া আমরা যারা সামান্য মাছ বিক্রি করে সংসার চালায় তাদের জন্য খুব ক্ষতি হবে কারন সামনে আসছে ঈদ যদি ব্যবসা করতে না পারি ছেলে মেয়েদের জামা কাপড় কিভাবে কিনে দেব। মনে হয় রমজানে না খেয়ে থাকতে হবে,তাই আমাদের দাবী হচ্ছে রমজান মাসে এই অবরোধ তুলে দেওয়া হউক।
টেকপাড়ার বোট মালিক জয়নাল সওদাগর বলেণ,৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করে দেওয়ার চেয়ে সাধারণ মৎস্যজীবীদের বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা অনেক ভাল হবে। কারন এতগুলো মানুষ করবে কি ? আমরা অতীতে দেখেছি আগষ্ট মাসের দিকে ২২ দিনের জন্য সাগরে বোট যাওয়া বন্ধ থাকে। কিন্তু এবারেই প্রথম এত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকবে এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। তার উপর বর্তমানে রমজান চলছে সামনে আসছে ঈদ আমরা কোথায় যাব কার কাছে গিয়ে চাইবো। কারন আমাদের তো বিকল্প কোন আয়ের পথ নেই। আমরা সরকারের কাছে দাবী জানাতে চায় যেন ৬৫ দিন অবরোধের সময় কমিয়ে আনা হওক একই সাথে রমজান মাসে অবরোধ না দেওয়া হওক।
নুনিয়ারছড়া এলাকার বোট মালিক আজিজুল ইসলাম বলেন,আমার মতে সরকার পুরু মৎস্য শিল্পকেই ধ্বংসকরার ষড়যন্ত করছে,তা না হলে এভাবে পবিত্র রমজানের দিনে এত দীর্ঘ সময় অবরোধ দিত না। আমি দীর্ঘ ৫০ বছর মাছের ব্যবসা করে আসছি। আমার জানা মতে সরকার সেটাকে মাছের প্রজনন মৌসুম বলছে সেটা অনেক দেরী আছে আর এভাবে রমজানের কথা চিন্তা না করে লাখ লাখ মৎস্যজীবী সম্প্রদায়কে ঈদ আনন্দমাটি করে অবরোধ দেওয়া মোটেও উচত হয়নি। এখন যে মৌসুম চলছে সেখানে সাগরে বেশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে, সেটা দিয়ে কোন পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল সময় কাটত। ঈদ আনন্দও ভাল হতো। কিন্তু যদি মাছই না থাকে তাহলে আমাদের আর কি থাকবে।
এ ব্যপারে বোট মালিক সমিতির সভাপতি কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেণ,৬৫ দিন অবরোধের ফলে সমস্ত মৎস্যজীবীরা চরম উৎকন্ঠায় আছে তারা কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা। সামনে ঈদ এখন রমজান কিভাবে কাটাবে সেটা নিয়ে সবাই চিন্তিত। আমরা মাননীয় মৎসও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রীর কাছে চিঠি দেব এবং চেস্টা করা হবে রমজানে যাতে অবরোধ না দেয় এবং অবরোধের সময় যাতে কিছুটা কমিয়ে আনে।
এ ব্যপারে জেলা মৎস অফিসার এস.এম খালেকুজ্জামান বলেন,১৬ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী সহ সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তারা মিলে সভা করেছে,মূলত আমরা এ বিষয়ে খুব ছোট কর্মচারী তাই এখানে আমাদের করার কিছুই নেই। সরকার যা সিদ্ধান্ত দেয় সেটা বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ।
মন্তব্য করুন