এম আবুহেনা সাগঈদগাঁও
সদরের উপকূলীয় পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী-রাজঘাট সড়কটি ১২ বছর বা এক যুগেও জোড়া লাগেনি। ঈদগাঁও থেকে এ সড়ক পথের দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার।২০১৬ সালের ঘুর্ণিঝড় রোয়ানুর হানায় পশ্চিমের বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়। সে সময় অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে নিয়মিত জোয়ারের পানি ঢুকে সড়কের পশ্চিম গোমাতলী থেকে উত্তর পাড়া রাজঘাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক বিলীন হয়ে যায়। তখন থেকে ঐ জনপদের মানুষের সড়ক পথে যাতায়ত বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ দেড় বছর পরও সড়কের ওই দেড় কিলোমিটার অংশের জোড়া লাগেনি।
তবে স্থানীয় লোকজনের মতে,বেড়িবাঁধ ভাঙনের পর থেকে গোমাতলীর প্রায় ১৫/২০ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটার বন্দী হয়ে পড়ে। পশ্চিম গোমাতলী থেকে রাজঘাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক নিয়মিত সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে যেত। তখন থেকে ঐ পথ নৌকায় পাড়ি দিতে হতো স্থানীয়দের। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বৃদ্ধ,নারী,রোগী ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ বেড়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের মতে,জোয়ার এলে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়,ভাঙনের পর থেকে রাজঘাট পর্যন্ত পথ নৌকায় পাড়ি দিতাম,কখনো কখনো ভাটার সময় পুরো এলাকা শুকিয়ে যেত,তখন নৌকা যেমন চলতনা,তেমনি ভাঙা সড়কে গাড়ি চলাচলও অসম্ভম ছিল। তাই ভাটার সময় নিরু পায় হয়ে পথচারীদের ৪কিলোমিটার পথ পায়ে
হেঁটে পাড়ি দিতে হতো।
জানা যায়,২০১৭ সালে ঘূর্ণিঝড় মোরা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যান সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি,কউক চেয়ারম্যান কর্নেল ফোরকান আহমদ। এ সময় তারা সড়কের একাংশের বেহাল অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বস্থ করেন বেড়িবাঁধ হয়ে গেলে অর্থ্যাৎ সড়কে জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ হলে রাস্তা সংস্কারের ব্যবস্থা করবেন।
এদিকে ২০১৮ সালে বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় এবং ঐ বছরের শুরুতেই বেড়ি বাঁধের যে অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করত সেই খালের মুখও বন্ধ করতে সক্ষম হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ সহকারীর মতে,কোটি টাকা ব্যয়ে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে। তবে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ হয়েছে অনেক আগেই। তাই সড়ক সংস্কারে আর কোন প্রতিবন্ধকতা থাকছেনা।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্র মতে, গোমাতলী সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ অংশসহ রাজঘাট জেটিঘাট পর্যন্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্প অনুমোদনের দীর্ঘ এক বছর পার হয়ে গেলেও সড়কের কিছু অংশে এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
কবে নাগাদ এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে তাও অনিশ্চিত। ফলে সড়ক সংস্কারের এলাকাবাসীকে আরো একটি বছর ভোগান্তিতে কাটাতে হবে।
কক্সবাজার সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর মতে, গোমাতলী সড়ক সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। চলতি বছর কিছু অংশে কাজ শুরু করা হলেও রাজঘাট এলাকায় বিভিন্ন কারণে শুরু করা হয়নি। তবে বর্ষার পর আশা করি সড়কের কাজ শুরু হবে।
মন্তব্য করুন