মাহাবুবুর রহমান.
আসছে পহেলা বৈশাখ। ১৪ এপ্রিল বাংলা বর্ষের শুরুর এই দিনকে স্বাগত জানাতে জেলা জুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ১৪২৫ বাংলা বর্ষের বিদায় এবং ১৪২৬ বর্ষের আগমনকে স্বরনীয় করে রাখতে অনেকে প্রাতিষ্টানিক ভাবে আবার অনেকে ব্যাক্তিগত ভাবে তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন বিপনী বিতানেও বৈশাখী পোষাকের বিক্রি বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো ও পহেলা বৈশাল উপলক্ষে নিয়েছে বিস্তারিত কর্মসূচী। এছাড়া জেলা প্রশাসনও ব্যাপক কর্মসূচী নিয়েছে বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে,সেখানে অনেক শিক্ষার্থী পহেলা বৈশাখের অনুষ্টানের জন্য প্রস্তুতি হিসাবে বিভিন্ন আলপনা,আর্ট শিল্প এবং মুখোশ তৈরি করছে। অনেকে কাগজের তৈরি শিল্পকর্ম তৈরি করছে তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী রাসনা,ঝুমা,ত্রপা বলেন,পহেলা বৈশাখের দিন আমাদের স্কুলে অন্যান্য বারের চেয়ে জমকালো আয়োজন হবে। এখানে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহন হবে এছাড়া অনেক সাবেক শিক্ষার্থী আসবেআসতে পারে।পহেলা বৈশাখ এখন বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব এই দিন সবাই মিলে আমরা খুব আনন্দ করি। আমরা মনে করি প্রত্যেক জাতির একটি নিজস্ব দিন থাকে আর আমাদের বাঙ্গালী জাতির জন্য বিশেষ দিন হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। এ ব্যপারে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন,এবারের পহেলা বৈশাখের অনুষ্টান হবে আমাদের স্কুলের জন্য স্বরনীয় অনুষ্টান এখানে বিভিন্ন দেশীয় খেলাধুলা,শিক্ষকদের জন্য আলাদা খেলাধুলা,পান্থা ইলিশ,সাংস্কৃতিক অনুষ্টান সহ বিস্তারিক কর্মসূচী পালন হবে।
এদিকে কক্সবাজার পৌর প্রিপ্যার্যাটরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন,পহেলা বৈশাখ বর্ণ্যাঢ্য ভাবে পালনের জন্য ইতি মধ্যে আমরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সে দিন স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য বাঙ্গালীর চিরায়িত খেলাধুলা,পান্থা ইলিশ সহ সব ধরনের আনন্দ বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে।এদিকে কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক এবং নাজনীন জাহান,১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ আয়োজনের জন্য কলেজের পক্ষ থেকে বেশ কিছু আয়োজন চলছে ইতি মধ্যে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মত করে ড্রেস তৈরি করেছে,কলেজ ক্যাম্পাসে আলপনা তৈরি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্টান এবং বিভিন্ন কর্মসূচীরও আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে কক্সবাজার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সত্যপ্রিয় চৌধুরী দোলন বলেন,পহেলা বৈশাখ এবং বাঙ্গালীর সব চেয়ে বড় উৎসবের দিন। আগে সর্বস্তরের মানুষ ব্যাপক ভাবে অংশ গ্রহন না করলেও এখন গ্রাম গঞ্জ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ এই দিনের উৎসরে সামিল হয়। তাই ১৪ এপ্রিল কক্সবাজার সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে আছে আগের দিন অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির দিন হিসাবে সন্ধ্যায় কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্টান। এবং ১৪ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের সাথে সকাল ৮ টায় যৌথ ভাবে মঙ্গলশোভা যাত্রা এবং একই দিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের আয়োজন করা হবে সে জন্য ইতি মধ্যে সাংস্কৃতিক সংগঠন গুলো মহড়া শুরু করেছে।এদিকে কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন,পহেলা বৈশাখ এখন কোন নির্দিষ্ট ধর্ম,বর্ণ বা জাতি গোষ্টির দিবস না এটা এখন বাংলাদেশের সব মানুষের প্রাণের অনুষ্টান। যেখানে সব বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। এছাড়া পহেলা বৈশাখ একমাত্র অনুষ্টান যেখানে পরিবারের সবাই অংশগ্রহন করে। এর মধ্যে দিয়ে আমাদের মধ্যে ভ্রাত্বিত্ব বোধ তৈরি হয়। আর ঐদিন কলেজের বিস্তারিক কর্মসূচী আছে,পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য আলাদা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আমার জানা মতে ছাত্রছাত্রীদের অংশ গ্রহনে দেশীয় খেলা,প্রতিযোগিতা,সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের আয়োজন আছে।
এদিকে শহরের বিপনী বিতান জেন্টর্স কর্ণার,শৈল্পিক,বাঙ্গালী বাবু সহ অনেক দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ইতি মধ্যে অনেক ক্রেতা পহেলা বৈশাখের জন্য বিশেষ কাপড় কিনছে। এর মধ্যে সাদা বা কালারিং সুতির কাপড় বেশি পছন্দ করছে ক্রেতারা। তবে আমরা যে পরিমান কাপড় এনেছি সে পরিমান ক্রেতা এখনো আসেনি। তবে সামনে আসতেও পারে। এদিকে ঈদগাঁও, রামু,উখিয়ার বেশ কয়েক টি শিক্ষা প্রতিষ্টানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেখানেও পহেলা বৈশাল আয়োজনের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট শাহ জাহান আলী বলেন,পহেলা বৈশাখ উদযাপনে ইতি মধ্যে অনেক কিছু হাতে নেওয়া হয়েছে। সকালে মঙ্গল শোভা যাত্রা সহ দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্টান সহ আরো বেশ কিছু কর্মসূচী হবে।
মন্তব্য করুন